সবসময় ডেস্ক :::সিলেটে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয় ও ভিসা আবেদনকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদীর নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ থেকে বিভিন্নস্থানে নাশকতার প্রেক্ষিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর উপশহরের অবস্থিত সহকারী কমিশনারের কার্যালয় ও সোবহানীঘাট এলাকার ভিসা আবেদন কেন্দ্র ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের এমপি প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদী নিহতের ঘটনার পর সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ের ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল করে ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিলেও এর আগ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে রাখেন।
বাদ জুম্মা নগরীতে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রশিবির, এনসিপি, ছাত্র জমিয়ত ও ইনকিলাব মঞ্চ। তবে ভারতীয় হাইকমিশনের আশেপেশে কোন বিক্ষোভ করা হয়নি।
শুক্রবার বিকেলে উপশহর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পুলিশ, সিআরটি ও সেনাবাহিনীর বাহিনীর সদস্যরা ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের অফিসের সামনে অবস্থান করছে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর গাড়ি টহল দিচ্ছে। বন্দরবাজার ও শহীদ মিনার এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর অবস্থানও লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে বাদ জুম্মা সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শরীফ উসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ, ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও পতিত ফ্যাসিস্টের অরাজকতা প্রতিরোধে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ইনকিলাব মঞ্চ। সড়কের এক পাশ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে এনসিপি, ছাত্রশিবির ও ছাত্রজমিয়তের নেতারা বক্তব্য দেন। গণঅধিকার পরিষদও পৃথক বিক্ষোভ করে।
এর আগে ছাত্রশিবির মিছিল করে। শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান চলাকালে বিকেল ৩টায় দুই যুবককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এরমধ্যে একজন ৭১ টিভিকে দালাল বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ ও অপরজন কর্মসূচি নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলার অভিযোগ আনা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীরা। মধ্যরাতে প্রথম আলো সিলেট অফিসে ঢিল ছুড়ে গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। একই সময়ে নগরীর চৌহাট্রা এলাকায় বিক্ষোভকালে স্থানীয় আল পাইন রেস্টেুরেন্টেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা।
এছাড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ প্রধান ও গোয়েন্দা সংস্থা প্রধানের পদত্যাগ দাবি করেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী স্লোগানসহ ‘হাদি হত্যার বিচার চাই’, ‘ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘শেখ হাসিনার দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘দিল্লি না হাদি, হাদি হাদি’,- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ইনকিলাব মঞ্চ শাবিপ্রবি শাখার দপ্তর সম্পাদক শোয়াইব আহমেদ চৌধুরী বলেন, হাদি হত্যার বিচার বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সমন্বয় করে কর্মসূচি ঘোষণা করব।
মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিভিন্ন স্থানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। নাশকতা রুখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
Leave a Reply