নিজস্ব প্রতিবেদক ::
সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে আলোচিত রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার কারাবন্দি প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়েছেন। তিনি হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়ে রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগার থেকে বের হয়েছেন।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক এসআই আকবর হোসেনের জামিন ও কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এস আই আকবর হোসেন জামিনে বের হওয়ার খবরে নিহত রায়হানের পরিবারে নেমে এসেছে হতাশা। নিহত রায়হানের মা জানিয়েছেন, জামিন পেয়ে এই আসামি যেকোনো সময় দেশ ছাড়তে পারেন।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতন করা হয়। পরদিন ১১ অক্টোবর গুরুতর অবস্থায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছিল।
এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে। তারা ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আকবরকে ওই বছরের ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়।
২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্যরা হলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।
জানা গেছে, পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এবং যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে। এরইমধ্যে প্রধান আসামি এসআই আকবর জামিন পেলেন। এই মামলার আরেক আসামি আশিক এলাহীও দুই-একদিনের মধ্যে জামিন পেতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এ ছাড়া বাকি সব আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
Leave a Reply