প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট এরং উদীচীর কার্যালয়ে হামলায় জড়িত সন্দেহে ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।এসব ঘটনায় আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারদের মধ্যে কাশেম ফারুক বগুড়ার আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা। মো. সাইদুর রহমান ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নোয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।
শেরপুরের বাসিন্দা রাকিব হোসেনকে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আইডি থেকে ঘটনাস্থলের ধ্বংসস্তূপের ছবি পোস্ট করা হয় এবং উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।
ঢাকার তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নাইম । তাকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে এ ঘটনায় লুট হওয়া ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাইম স্বীকার করেছেন, তিনি মোট ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা লুট করেছিলেন। লুটের টাকা দিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে একটি টিভি ও একটি ফ্রিজ কেনেন, যা উদ্ধার করা হয়েছে।
কারওয়ান বাজার রেললাইন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয় মো. সোহেল রানা । তার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকার একাধিক থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। একই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার মো. শফিকুল ইসলাম ।তার বিরুদ্ধে অতীতে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলমান । ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এসব গ্রেপ্তারের পূর্বে গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা ছিলেন।
এছাড়া্ও বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশ প্রত্যাবর্তন, আসন্ন বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা-সংক্রান্ত পদক্ষেপ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের গ্রেপ্তার-তদন্তের বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়, সম্প্রতি দুটি জাতীয় দৈনিক ও দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলার সাথে জড়িত সন্দেহে ভিডিও ফুটেজ দেখে ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
এসব ঘটনায় আজ (সোমবার) সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি শনাক্ত সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাই-কমিশনারের বাসভবনের সম্মুখে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারীদের মধ্য থেকে তিনজনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে।রোববার বিকেলে এই বৈঠকে ওসমান হাদি হত্যায় জড়িত এবং অন্যান্য বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তদের দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে।
Leave a Reply