শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
শিরোনাম :
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সিলেট বিভাগীয় কমিটি ঘোষণা ধর্মের টানে’ অভিনয় ছাড়লেন চিত্রনায়িকা উজ্জ্বল আলোর মতো দ্যুতিময় কাবা, নভোচারীর তোলা ছবি ভাইরাল বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল: প্রসঙ্গ- প্রাথমিক শিক্ষা ও বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি দক্ষিণ সুরমা সমাজ কল্যাণ সমিতি ইউকে’র দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শিবগঞ্জ-মেজরটিলা রুটে অবৈধ টমটমের দাপট অদক্ষ চালক, চাঁদাবাজি ও বিদ্যুৎ অপচয়ে চরম ভোগান্তি পেঁয়াজ চোরাচালান বেড়েছে, ট্রানজিট পয়েন্ট সালুটিকর ৩৪ নং ওয়ার্ডের খাদিমপাড়া ১নং রোড মসজিদে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল” বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে শুক্রবার বাদ জুমা দেশের সব মসজিদে দোয়ার আহ্বান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুক্রবার লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে না। সিলেটের অর্ধশতাধিক এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না শনিবার সিলেটে গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যুবক বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মিফতাহ্ সিদ্দিকীর দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবে দোয়া দেশবাসীর সম্মিলিত দোয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়া সুস্থ হবেন ইনশাআল্লাহ: মিফতাহ সিদ্দিকী খালেদা জিয়ার সাথে লন্ডন যাচ্ছেন সিলেটের এনামুল হক সিলেট বিভাগের আরও ৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা ‘করাচিতে সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে বাংলাদেশ’ বোমা হামলার হুমকি: শারজাহ–হায়দরাবাদ ইন্ডিগো ফ্লাইট জরুরি অবতরণ করল মুম্বাইয়ে পুতিনকে স্বাগত জানাতে ভারতজুড়ে যত আয়োজন খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে প্রস্তুত কাতার আরও ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা বিএনপির আইজিপি বাহারুল আলমকে সরিয়ে দিতে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ ডিএমপির ৫০ থানার ওসি বদলি ইউরোপের প্রলোভন লিবিয়া, নেপালে সিলেটের তরুণ যুবকদের বন্দিজীবন সিলেটে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত সিলেটে ২৬ ডিসেম্বর শুরু বিপিএল, পূর্ণাঙ্গ সূচি ঘোষণা বিদেশী পাইপগান উদ্ধার
আসিম মুনির: পাকিস্তানের নতুন ‘সুলতান’

আসিম মুনির: পাকিস্তানের নতুন ‘সুলতান’

প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি কিংবা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নন, পাকিস্তানে এই সময়ে সবচেয়ে বড় ‘ভিআইপি’র নাম ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির আহমেদ শাহ। ৫৭ বছর বয়সী ‘হাফেজে কোরআন’ এই সেনা কর্মকর্তা চার তারকা জেনারেল থেকে পাঁচ তারকা ফিল্ড মার্শাল, সেনাপ্রধান থেকে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হয়েছেন। ধাপে ধাপে উঠে এখন তিনি পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে কার্যত আইনের ঊর্ধ্বে থাকা একজন ব্যক্তি।

আসিম মুনির একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘প্রিয় বন্ধু’, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘আয়রন ব্রাদার’। উল্টো দিকে ভারতের মতে, ‘সবচেয়ে বড় হুমকি’ এবং আফগান তালেবানের দৃষ্টিতে ‘এক নম্বর শত্রু’।

বর্তমানে পাকিস্তানের সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, পারমাণবিক কমান্ড—সবই আসিম মুনিরের হাতে। সব মিলিয়ে নতুন একধরনের সামরিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছেন আসিম মুনির, যাকে অনেকেই বলছেন ‘মুনিরবাদ’।

যে পথে তিনি এলেন

১৯৬৮ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে আসিম মুনিরের জন্ম। তাঁর পরিবার ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর পাঞ্জাবের জলন্ধর থেকে পাকিস্তানে আসে। প্রথমে তারা টোবা টেক সিংয়ে বসবাস করে, পরে রাওয়ালপিন্ডির ধেরি হাসানাবাদে স্থায়ী হয়।

ছোটবেলায় আসিম মুনির গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন, যেখানে জীবন ছিল সহজ, কিন্তু শৃঙ্খলাবদ্ধ। স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ছিল দারুণ আকর্ষণ। ফাস্ট বোলিংয়ে তাঁর দক্ষতা ছিল প্রশংসনীয়, যা তাঁর শারীরিক সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের পরিচয় দেয়। ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল তীব্র।

আসিম মুনিরের বাবা সৈয়দ সরওয়ার মুনির ছিলেন রাওয়ালপিন্ডির এফজি টেকনিক্যাল হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল ও একজন ইমাম। তাঁর বাবার ধর্মীয় ও শিক্ষকতার ভূমিকা পরিবারে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ ও নৈতিক পরিবেশ তৈরি করে। মা সম্পর্কে খুব কম তথ্য পাওয়া যায়। সৈয়দ বংশের এই পরিবারে ইসলামি মূল্যবোধ ছিল গভীরভাবে প্রোথিত।

আসিম মুনিরের স্ত্রী সৈয়দা ইরুম আসিম এবং তাঁদের তিন সন্তান রয়েছেন। তাঁরা রাওয়ালপিন্ডিতে থাকেন। তবে তাঁদের জীবন প্রকাশ্যে আসে না। এ বছরের আগস্টে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছিল; কিন্তু এর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

আসিম মুনির প্রাথমিক শিক্ষা পেয়েছেন রাওয়ালপিন্ডির মারকাজ মাদ্রাসা দারুল তাওহিদে ধর্মীয় পরিবেশে। পরবর্তী সময়ে তিনি অ্যাবোটাবাদের পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। আসিম মুনির সামরিক একাডেমিতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।

যেভাবে সেনাপ্রধান আসিম মুনির

২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। এ জন্য তিনি দায়ী করেন রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রকে। তখনকার সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া।

ইমরান খানের এ বক্তব্য দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। একের পর এক মামলা দেওয়া হয় তাঁর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় এখন কারাগারে আছেন একসময়ের চৌকস ক্রিকেট তারকা ইমরান খান।

বাজওয়ার মেয়াদ শেষ হলে পরবর্তী সেনাপ্রধান কে হবেন, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। তালিকায় ছিলেন ছয়জন। তাঁদের মধ্য থেকে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি বেছে নেন আসিম মুনিরকে। লক্ষণীয় হলো, আসিম মুনিরকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ আগ্রহ ছিল।

নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সচরাচর অতীতে যা দেখা যায়নি। এটা ছিল মূলত পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে ইমরানের মন্তব্যের ধারাবাহিকতা।

২০২২ সালে আসিম মুনির আইএসআই প্রধান থেকে পাকিস্তানের ১১তম সেনাপ্রধান হিসেবে পদোন্নতি পান।

এরপর ২০২৫ সালের মে মাসে ভারতের সঙ্গে চার দিনের সংঘাত ঘটে, যা পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ নামে অভিহিত করে। ভারত যে অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই সংঘাতের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই, গত ২০ মে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের পর পাকিস্তানের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করা হয়।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, আসিম মুনির মনে করেন, পেহেলগাম–কাণ্ডকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ট্রাম্পের দূতিয়ালির মাধ্যমে থামলেও এতে তাঁর দেশ বিজয়ী হয়েছে। এই সাফল্যের জন্য তাঁর ফিল্ড মার্শাল পদ পাওয়া উচিত। তিনি যেমন ইচ্ছা করেছেন, তেমনই হয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রধান চাইলে পাকিস্তানে যেকোনো কিছু হওয়া সম্ভব।

আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর নিজেকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করেন, যা ছিল একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত।

ফিল্ড মার্শাল একটি পাঁচ তারকা সামরিক পদমর্যাদা। এটি সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদ। এটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও বিরল পদ, যা সাধারণত ব্যতিক্রমী সামরিক অবদানের জন্য দেওয়া হয়। পদটি জেনারেলের চেয়েও উচ্চতর এবং এটি একটি আনুষ্ঠানিক বা যুদ্ধকালীন পদমর্যাদা হিসেবে বিবেচিত হয়, নিয়মিত সেনাকাঠামোতে এটি খুব কম ব্যবহৃত হয়।

সংবিধান সংশোধন: কী বদলে গেল

আসিম মুনির এখন অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী। ১২ নভেম্বর পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে সংবিধানের ২৪৩ নম্বর ধারা সংশোধনী ২৩৪-৪ ভোটে পাস হয়। পরদিনই প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি তাতে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্য দিয়ে এটি আইনে পরিণত হয়।

নজিরবিহীন দ্রুততায় সংবিধানের এই সর্বশেষ সংশোধনীর ফলে সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মুনির এখন পাকিস্তানের নৌ ও বিমানবাহিনীরও তত্ত্বাবধান করবেন।

সংবিধানে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার প্রধানের মাথার ওপর কোনো পদের অস্তিত্ব এত দিন ছিল না। মুনিরের জন্য বিশেষভাবে পদটি তৈরি করা হয়েছে।

সংবিধানের ওই সংশোধনী বিলে মুনিরের জন্য বিশেষ আইনি রক্ষাকবচের বন্দোবস্ত করেছে শাহবাজ শরিফের সরকার। পাকিস্তান সেনা সর্বাধিনায়কের বিরুদ্ধে আদালতে কোনো মামলা করা যাবে না।

মুনিরের ফিল্ড মার্শাল পদবি ও পোশাক আজীবনের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক অবসর গ্রহণের পরও তাঁকে ‘দায়িত্ব ও কাজ’ দেওয়া হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সিদ্ধান্তের কারণে তিনি আজীবন জনপরিসরে কোনো না কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন। অনেকেই এটিকে সেনাবাহিনীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর হিসেবে দেখছেন।

সাংবাদিক ও পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের সহসভাপতি মুনিজা জাহাঙ্গীর মনে করছেন, ‘আবার ক্ষমতার ভারসাম্যকে সামরিক বাহিনীর দিকে ঝুঁকিয়ে দেওয়া হলো এবং এমন এক সময়ে তাদের আরও ক্ষমতায়িত করা হলো, যখন কিনা সেনাবাহিনীতে লাগাম টানার প্রয়োজন ছিল।’

পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটির রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে সেনাবাহিনী। কখনো কখনো তারা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে, আবার অনেক সময় পর্দার আড়ালে থেকে কলকাঠি নেড়েছে।

পাকিস্তানের ইতিহাসে, জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ও জেনারেল জিয়াউল হকের মতো সামরিক নেতাদের প্রকাশ্য নিয়ন্ত্রণের কারণে দেশটি একাধিকবার দোদুল্যমান পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।

বেসামরিক ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতার এই ভারসাম্যকে হাইব্রিড শাসন হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকেরা। সংবিধানের নতুন সংশোধনীকে এখন সেই ভারসাম্য পরিবর্তন হয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষে ঝুঁকে পড়া হিসেবে দেখছেন অনেকে।

ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমার কাছে, এই সংশোধনীটি সর্বশেষ ইঙ্গিত, সম্ভবত এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী।’ তাঁর মতে, ‘পাকিস্তান এখন আর হাইব্রিড সিস্টেম নয়; বরং একটি পোস্ট-হাইব্রিড সিস্টেমের অভিজ্ঞতা লাভ করছে।’

 

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 shobshomoy.com
Design BY Web Nest BD
shobshomoy.com