নীতিরও একটা নীতি থাকে। নীতি বাক্যেরও একটা সংগতি থাকে। আমি নীতি কথা খরচ করে কারো কারো মনে উচ্চাসনে একশুন্য জায়গা ভোগ-দখল করার জন্য আজ কলমের সাথে আঙ্গুলের সন্ধি করি নাই। কিছু মানুষের নীতিতে সর্দি ধরেছে তা বয়ান করার জন্য লিখছি। কারো যদি ভালো না লাগে বা হিয়ার মাঝে কোনো দুর্দশার আঁচর লাগে তার জন্য আগাম দুঃখ প্রকাশ করছি। নীতি কথাগেুলো যদি কারো মনে খায় তবে আমাকে বাহবা না দিয়ে নীতির সর্দি উপশম করতে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করুন।
একজন সাংবাদিক যদি “বরের ঘরে পিসি, কনের ঘরে মাসি” এই বাক্য হেফজ করে ও সেই মতে চলে তবে তাকে কোনোক্রমেই সাংবাদিক বলা যায় না। যে সাংবাদিক উভয় পক্ষের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখে তার নীতি সর্দিতে ভরা। এই ধরনের সাংবাদিকরা কেবল নিজেদের স্বার্থের জন্য উভয় পক্ষের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে। ছি ছি, সাংবাদিক ছি। ফেজবুকে লম্বা লম্বা ওয়াজ করেন তলে তলে জুয়ার টাকা, মাদকের টাকা, ঠিকাদারকে হুমকি দিয়ে পরের টাকায় নিজের বাজার করেন । ছি আপনি এ কেমন সাংবাদিক?
সর্দি এক ধরনের ভাইরাসঘটিত সংক্রামক রোগ , যা মানবদেহের ঊর্ধ্ব শ্বাসপথ, বিশেষ করে নাকে আক্রমণ করে। যার ফলে গলবিল, অস্থিগহ্বর ও স্বরযন্ত্রও আক্রান্ত হয়। নীতি হলো-সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও যুক্তিযুক্ত ফল অর্জনের জন্য সুচিন্তিত নির্দেশিকা। সাংবাদিকের নীতিতে সর্দি আক্রমণ করলে তার চোখ ও বিবেক ভয়ঙ্কর ভাইরাসঘটিত সংক্রামক রোগে পরিণত হয়। নীতিতে সর্দি ধরা সাংবাদিককে সামাজিকভাবে প্রত্যাখ্যান করা উচিত। সেই সাথে তাদের তকমা দেওয়া দরকার ‘ত্যাজ্যসাংবাদিক’ হিসেবে ।
সন্ধির নিয়মে সম+বাদ=সংবাদ। প্রকৃতি ও প্রত্যয়ের নিয়মে সংবাদ+ষ্ণিক(ইক)=সাংবাদিক। তার মানে সংবাদের সাথে ঘনিষ্ট সর্ম্পকযুক্ত ব্যক্তি-ই সাংবাদিক। সাংবাদিক মানে নিস্তারহীন তথ্য ও তত্ত্বের জন্য, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ তৈরির জন্য নীতি ও সত্যের লড়াকু সিপাই। সংবাদ ও সংবাদপত্রের মাঝখানে সাংবাদিক। এ যেনো প্রত্যেক্ষ-পরোক্ষ ও সত্য-মিথ্যার কঠিন বিচারালয়ের কর্মযজ্ঞ ও নীতি-নৈতিকতার অগ্নিখেলা। একজন সাংবাদিকের শব্দ চয়ন ও বাক্য গঠন এক লোহমায় সারা দুনিয়ার আনাচে-কানাচে পৌঁছে যায় বলেই সংবাদপত্রের ভাষাকে বলা হয় পৃথিবীর বচন। সংবাদপত্র-ই পৃথিবীর মুখপাত্র আর সাংবাদিক তার সদা জাগ্রত বীর সেনানী। সংবাদ সবশ্রেণি লোকের খোরাক।
কানামাছি, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী শিশুতোষ লোকজ খেলা । এ খেলা শিশুকালে কেউ খেলেনি তা ভাবাই যায় না। কিন্তু বড়ো হয়ে রৌমারী কিছু সাংবাদিক কানামাছি খেয়ায় মত্ত। কানামাছি খেলায় একজনের চোখ বেঁধে দেওয়া হয়, সে অন্যদের ধরার চেষ্টা করে। আর আপনি তো নীতির চোখ বেঁধে অন্যকে ধরার চেষ্টা করছেন। সুরা-কেরাত ঠিক না থাকলে যেমন সেই ইমামের পেছনে কোনো মুসল্লি ধর্মচর্চা করবে না তেমন আপনার নীতি না থাকলে ও আপনার নীতিতে সর্দি ধরলে আপনাকে কেউ সঠিক সাংবাদিক মনেই করবে না।
সাংবাদিকতা কখনো হুমকি-ধামকি দিয়ে টাকা কামানো ব্যবসা নয়। সাংবাদিকতা মানে কারো উপর অযাচিত কৌশল খাটিয়ে টাকা বাগিয়ে নেওয়া না। সাংবাদিকতা মানে কোনো দপ্তরে গিয়ে সেলামি চাওয়া নয়। সাংবাদিতা মানে সাংবাদিক সংগঠন করে টাকার ভাগ ফেলানো নয়। সাংবাদিকতা মানে রিলিফের বরাদ্দে নিজের ভাগ ফেলানো নয়। আপনি/আপনারা এসব কী করছেন? ছি ছি সাংবাদিক ছি।
সাংবাদিকতা দিয়ে আপনার সংসার না চললে সাংবাদিকতা বাদ দিয়ে ৭৪ হাত দূরে চলে যান। অন্যজনকে সঠিক সাংবাদিকতার সুযোগ দিন। আপনার কারণে অন্যজনকে যেনো না শুনতে হয়, ছি ছি, সাংবাদিক ছি।
Leave a Reply