এখন থেকে সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গেলে রিটার্ন টিকিট কাটতে হবে ও যাত্রার সময় চেক-ইন কাউন্টারে ফিরতি টিকিট দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অন্যথায় যাত্রীকে বোর্ডিং পাস দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ট্রাভেল এজেন্টরা। ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবগামী যাত্রীদের জন্য নতুন এই নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি এয়ারলাইন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাসিন্দা সাইয়্যেদ মিরান দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেদ্দাগামী ফ্লাইট ধরতে গেলে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন বলে জানান। ওমরাহ ভিসা থাকা সত্ত্বেও ফিরতি টিকিট না থাকায় তাকে চেক-ইন কাউন্টারে থামিয়ে দেওয়া হয়।
মিরান বলেন, আমি ভেবেছিলাম মদিনায় কয়েক দিন কাটানোর পর ফেরার তারিখ ঠিক করবো। কিন্তু চেক-ইন করতে গেলে তারা বোর্ডিং পাস দিতে অস্বীকৃতি জানায়। কাউন্টার বন্ধ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে অনলাইনে দ্রুত ফিরতি টিকিট কিনতে আমাকে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
ভ্রমণ সংস্থাগুলো বলছে, সম্প্রতি এয়ারলাইন ও সৌদি কর্তৃপক্ষ ওমরাহযাত্রীদের যাত্রা ও ফেরার তারিখ স্পষ্ট রাখার নিয়ম কঠোর করেছে। এখন থেকে ভিসার ধরন বা নাগরিকত্ব যাই হোক না কেন, ওমরাহর উদ্দেশ্যে যাওয়া সব যাত্রীর জন্যই ফিরতি টিকিট বাধ্যতামূলক।
আসা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক কায়সার মাহমুদ বলেন, এই নিয়মের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ সহজেই প্রতিটি যাত্রীর থাকার মেয়াদ নির্ধারণ করতে পারে ও কেউ যেন অতিরিক্ত সময় অবস্থান না করে তা নিশ্চিত হয়।
তিনি আরও বলেন, যাত্রীরা নিজেরা টিকিট বুক করলেও অবশ্যই রিটার্ন টিকিট নিতে হবে। সিস্টেম এখন ভিসার মেয়াদ ও ভ্রমণের তারিখ ক্রস-চেক করে। ফিরতি টিকিট থাকলে বোঝা যায় যাত্রী কবে দেশে ফিরবেন, এতে ইমিগ্রেশন বা বোর্ডিংয়ের সময় কোনো জটিলতা হয় না।
কায়সার মাহমুদের মতে, ট্রাভেল এজেন্টদেরও এখন যাত্রার সম্পূর্ণ তথ্য অনলাইনে আপলোড করতে হয়। যদি কারও ফেরার তারিখ সিস্টেমে না থাকে, তাহলে অনেক সময় চেক-ইনই সম্ভব হয় না। এতে যাত্রীরা অযথা মানসিক চাপে পড়েন। এই নিয়মে তা এড়ানো যাচ্ছে।
রিহান আল-জাজিরা ট্যুরিজমের শিহাব পারওয়াদ বলেন, অনেকে মনে করেন অনলাইনে নুসুক অ্যাপ বা এয়ারলাইনের ওয়েবসাইট দিয়ে টিকিট কাটলে পরে ফেরার তারিখ ঠিক করা যাবে। এখন আর তা সম্ভব নয়। ওমরাহ ভিসা ও হোটেল বুকিং থাকলেও চেক-ইনে ফিরতি টিকিট দেখাতেই হবে। এটি এখন যাচাই প্রক্রিয়ার অংশ।
তিনি বলেন, ফিরতি টিকিট শুধু এয়ারলাইন নয়, সৌদি কর্তৃপক্ষের জন্যও জরুরি। এটি হজ ও ওমরাহ মৌসুমে যাত্রী চলাচল, পরিবহন ব্যবস্থা ও হোটেল ব্যবস্থাপনা সহজ করে। এক কথায়, এটি যাত্রীদের জন্য পরবর্তী সময়ে ঝামেলামুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিত করে।
অপারেটরদের পরামর্শ, ওমরাহ যাত্রার পরিকল্পনা করার সময়ই যেন সবাই যাওয়া ও ফেরার টিকিট একসঙ্গে বুক করেন। এতে শেষ মুহূর্তের দুশ্চিন্তা ও বিমানবন্দরে জটিলতা এড়ানো সম্ভব হবে।
Leave a Reply