সিলেট বিভাগে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ১২ দিনে ৭৫ জন শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছে আঞ্চলিক স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়। এ বছর এই বিভাগে প্রায় ৪শ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধরন বদলে ডেঙ্গু ভাইরাস এখন আরও বিপজ্জনক আকার ধারণ করেছে। এজন্য ডেঙ্গুর লার্ভা অনুসন্ধান ও সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে নতুন করে আরও তিনজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে সিলেট বিভাগে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯০ জনে। বর্তমানে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন।
স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের তথ্যমতে, বিভাগের মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এরমধ্যে হবিগঞ্জে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। চলতি বছর সিলেট জেলায় ৭১ জন, সুনামগঞ্জে ৫৫ জন, মৌলভীবাজারে ৫৪ জন এবং হবিগঞ্জে ২১০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ বছর সিলেট বিভাগে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। গত ৮ অক্টোবর সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে তিনি মারা যান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভাষ্য, ডেঙ্গু ধরন বদলেছে। এখন রোগীদের মধ্যে জটিল উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। এজন্য সিলেটের রোগীদের চিকিৎসার জন্য পোর্টেবল আলট্রাসনোগ্রাম ও বেডসাইড হেমাটোক্রিট মেশিনের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। এই যন্ত্রপাতি থাকলে দ্রুত রোগ নির্ণয় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হবে। এ ছাড়া এটি চিকিৎসা কার্যক্রমকে গতিশীল করতে সাহায্য করবে।
গত দুই দশকে বৃষ্টির সময় অর্থাৎ জুলাই ও আগস্ট মাসে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হতো। তবে চার বছর ধরে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছে অক্টোবর মাসে। বিশেষজ্ঞরা নভেম্বর মাসকে ডেঙ্গুর প্রাণঘাতী মাস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান সমকালকে বলেন, আক্রান্তদের বেশির ভাগ সম্প্রতি ঢাকায় যাওয়া-আসা করেছেন। ঢাকার পার্শ্ববর্তী হওয়ায় হবিগঞ্জ জেলায় রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। তিনি জানান, সিলেটের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করা প্রয়োজন।
Leave a Reply