শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
শিরোনাম :
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সিলেট বিভাগীয় কমিটি ঘোষণা ধর্মের টানে’ অভিনয় ছাড়লেন চিত্রনায়িকা উজ্জ্বল আলোর মতো দ্যুতিময় কাবা, নভোচারীর তোলা ছবি ভাইরাল বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল: প্রসঙ্গ- প্রাথমিক শিক্ষা ও বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি দক্ষিণ সুরমা সমাজ কল্যাণ সমিতি ইউকে’র দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত শিবগঞ্জ-মেজরটিলা রুটে অবৈধ টমটমের দাপট অদক্ষ চালক, চাঁদাবাজি ও বিদ্যুৎ অপচয়ে চরম ভোগান্তি পেঁয়াজ চোরাচালান বেড়েছে, ট্রানজিট পয়েন্ট সালুটিকর ৩৪ নং ওয়ার্ডের খাদিমপাড়া ১নং রোড মসজিদে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল” বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে শুক্রবার বাদ জুমা দেশের সব মসজিদে দোয়ার আহ্বান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুক্রবার লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে না। সিলেটের অর্ধশতাধিক এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না শনিবার সিলেটে গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যুবক বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মিফতাহ্ সিদ্দিকীর দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবে দোয়া দেশবাসীর সম্মিলিত দোয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়া সুস্থ হবেন ইনশাআল্লাহ: মিফতাহ সিদ্দিকী খালেদা জিয়ার সাথে লন্ডন যাচ্ছেন সিলেটের এনামুল হক সিলেট বিভাগের আরও ৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা ‘করাচিতে সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে বাংলাদেশ’ বোমা হামলার হুমকি: শারজাহ–হায়দরাবাদ ইন্ডিগো ফ্লাইট জরুরি অবতরণ করল মুম্বাইয়ে পুতিনকে স্বাগত জানাতে ভারতজুড়ে যত আয়োজন খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে প্রস্তুত কাতার আরও ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা বিএনপির আইজিপি বাহারুল আলমকে সরিয়ে দিতে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ ডিএমপির ৫০ থানার ওসি বদলি ইউরোপের প্রলোভন লিবিয়া, নেপালে সিলেটের তরুণ যুবকদের বন্দিজীবন সিলেটে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত সিলেটে ২৬ ডিসেম্বর শুরু বিপিএল, পূর্ণাঙ্গ সূচি ঘোষণা বিদেশী পাইপগান উদ্ধার
বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল: প্রসঙ্গ- প্রাথমিক শিক্ষা ও বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি

বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল: প্রসঙ্গ- প্রাথমিক শিক্ষা ও বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যে হারে মতিভ্রম হয়েছে তাতে প্রাথমিক শিক্ষা ও বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি নিয়ে দু’চারটে কথা বলা মানেই বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল করা। শখের তালে নাচতে গিয়ে একসময় সেটা অভ্যাসে পরিণত হয়। একে একে ঘরে-ঘরে শখ পালন করতে গিয়ে পুরো মহল্লা পরিণত হয় বাইজি পাড়ায়। দেশে নানা ধরণের আন্দোলনের কারণে বলা যায় দাবি আদায়ের বেলায় পুরো দেশ বাইজি পাড়ায় রুপান্তর হতে যাচ্ছে। সেই ধারায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের সপে দিয়েছেন দফায় দফায় আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। জুলাই আন্দোলনের মত শেষ দুয়ারে তারাও কমপ্লিট শাটডাউনও দিয়েছিলেন। যা সুধীসমাজের কারোই কাম্য ছিল না। আজ বলব কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার হাল-হকিকত ও শিক্ষকদের আন্দোলনের নামে পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি প্রসঙ্গে।

জার্মান শিাবিদ ফ্রেডরিখ ফ্রয়েবেল শিশু শিক্ষার প্রাচীন প্রবর্তক। তার সুবাদে কালের কোলে কোলে আজকের শিশু শিক্ষার রঙ, রূপ ও রস এত দেদীপ্যমান ঘরে ঘরে। বুনিয়াদি এই শিক্ষা ব্যবস্থার নাজেহাল অবস্থা ক্ষল্য করা যায় রৌমারী উপজেলায়। যা সচেতন মহলের জন্য ব্যাপক উদ্বিগ্ন কাহিনী। উপজেলার ১১৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি বিদ্যালয় ছুটি হয় রাষ্ট্রষন্ত্রের নির্ধারিত ঘড়ির কাটা মোতাবেক। বেশিভাগ বিদ্যালয় ছুটি হয় দুপুর ২ থেকে আড়াইটার মধ্যে। প্রধান শিক্ষক পদটি যেনো কেবল টাকা ইনকাম করার সাইবোর্ড । সকালে বিদ্যালয়ে হাজিরা খাতায় সই করেই বিদ্যালয়ের কাজের নামে লাপাত্তা হওয়ার গল্প শোনা যায় বেশ। শিক্ষকদের নামে ওঠা অভিযোগ হাওয়া হয়ে যায় এমন নাটকও কম নয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একসময়ের আওয়ামীলীগ পদধারী ও আওয়ামীলীগ সমর্থিত শিক্ষকরা এই আন্দোলনের মূল হোতার পরিচয় দিয়েছেন বার বার। নিজেদের মঙ্গলের জন্য পুরো দেশের অমঙ্গল করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যা করতেছেন তা কোনাক্রমেই বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারেননি বা পারেন না।

রৌমারীতে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি যেনো ফাঁকি দেওয়ার নতুন সংযোজন। উপজেলায় দুটি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি আছেন। একটা সমিতির শীর্ষ দায়িত্বে আছেন আওয়ামীলীগের কান্ডারি ও বহুরূপী দুই শিক্ষক। যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সমিতির পদে থাকার কারণে নিজেদের সহিশুদ্ধ মনে করেন কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা জ্ঞানপাপী। অন্য সমিতি সমিতির মত থাকলেও দুই সমিতির অজুহাতে শিক্ষকে-শিক্ষকে দলাদলি, অনিয়মের সাথে গলাগলি, পদের জন্য মিথ্যার সাথে কোলাকুলি করেন অহরহ। নিজের আমিরত্ব জাহির করার জন্য শিকরাও যেনো টাউট-বাটপার হওয়ার প্রতিযোগিতায় মশগুল। লোক দেখানো প্রোগ্রামগুলো ঠিক বিদ্যালয় বন্ধের দিন-ই হয় কিন্তু তার আয়োজন হয় কর্ম দিবসে। মুষ্টিমেয় শিক্ষক ছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষককে দেখা যায় শিক্ষার চেয়ে শিক্ষক সমিতি নিয়ে অধিকতর ব্যস্ত থাকতে। শিক্ষার মান নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলাপচারিতা তো দূরের কথা। শিক্ষার মানের জ্ঞান যেনো তাদের বিকেবের আকশী নাগাল না পায়। মোট কথা প্রাথমিক শিক্ষার মান দিন দিন অধপতনের দিকে যাচ্ছে আর শিক্ষকরা বেতনের গ্রেড বৃদ্ধির জন্য উন্মাদ হয়ে গেছেন।

বেতনের গ্রেড বৃদ্ধির নয়া ভূত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাথায় নয়া বাটপারি ধাঁচের কাব্য রচনা করতে বসেছে। বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে চলছিল বার্ষিক পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের ঠেক দিয়ে ক্লাস বর্জন বা কর্ম বিরতির নামে যা করেছেন তা একপ্রকার পাকামি বা ফাজলামো। আমার কাছে মনে হয় যোগত্যাহীন লোকগুলো কালেকৌশলে চাকরি পেয়ে বেতনের গ্রেড বৃদ্ধির এই অবিমৃষ্যকারিতায় বিভোর হয়েছেন। বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষকদের জেঠামি, শিশু শিক্ষার জন্য ভয়ঙ্কর বিপদের আগাম আভাস বা অশনি সংকেত।

মূল বেতনের সাথে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত ও টিফিন ভাতা যুক্ত, প্রতি বছর জুলাই মাসে মূল বেতনের ৫% হারে বেতন বৃদ্ধি ও প্রতি বছর ২ টি উৎসব ভাতা হিসেবে মূল বেতনের ২৫% এবং পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে মূল বেতনের ২০% বৈশাখি ভাতা প্রাপ্ত হন এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। হাওর ও দুর্গম অঞ্চলের জন্য আলাদা ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। চাকরি জীবনে ২টি টাইম স্কেল পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য কল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য দেন রাষ্ট্রযন্ত্র। চাকরির পাঁচ বছর পূর্ণ হলে পরেন পেনশনের আওতায়। চাকরি শেষে পাবেন ১২ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ল্যামগ্রান্ড, এক বছরের পিআরএল, অর্জিত মূল বেতনের ২৩০ গুণ পেনশন ও আজীবন পারিবারিক পেনশন। ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে হলে পেনশনারদের মাসিক চিকিৎসা ভাতা হবে ২ হাজার ৫০০ টাকা। তাতেও আপনাদের হয় না? আর কত চান? কিন্তু যারা বেকার আছে? আমার কাছে মনে হয় যোগত্যাহীন লোকগুলো কালেকৌশলে চাকরি পেয়ে বেতনের গ্রেড বৃদ্ধির এই জেঠামি করছেন। তার মানে বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল।

রৌমারী সরকারি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষক দাবি আদায়ের জন্য প্লে কার্ডে দাবির বানান ভুল লিখেছেন। বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষারিত এক চিঠিতে ১০২ টি শব্দের মধ্যে প্রায় ২৭ টি শব্দের বানান ভুল, ওই বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক সহকারী শিক্ষক “সহকারী”বানানটিও ভুল লিখেছেন। রৌমারী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক “সহকারী ও শহিদ” শব্দের সঠিক বানান লিখতে পারেন না। অনেক শিক্ষক “কর্মবিরতি” শব্দটিও লিখতে পারেন নাই। তাহলে যারা যে শব্দ দিয়ে আন্দোলন করছেন তারা সেই শব্দের সঠিক বানানটিও জানেন না। কেবল তারা জানেন বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলে প্রাথমিক শিক্ষার মান তলানীতে নয় কী?

সাধারণ বাংলা শব্দের বানানের বেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সচেতন নয় বটে। সেখানে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও ব্যাকরণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এতটাই শক্তিহীন যে বেশির ভাগ শিক্ষক জানেন না বাংলা ভাষার বর্ণমালা কতটি। স্পর্শ বর্ণ , নাষিক্য বর্ণ, ঘোষ বর্ণ অঘোষ বর্ণ কী? প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় যদি বাংলা বর্ণমালা-ই না চেনে বা জানে তাহলে পরের শিক্ষা ঘরে শিক্ষার্থীদের অবস্থা কী হবে বা হয়? বর্ণের মাত্রা কী তাও অনেকে জানেন না। কলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সাথে তুমুল কথা ছিঁড়াছিঁড়ি হয়েছে। “গণ” বানান নিয়ে। তিনি “গণিত ও জনগণ” বানানে মুর্ধা-ণ দিতে কোনোক্রমেই রাজি না। একসময় যখন বুঝলাম তিনি গণ ও জনগণ বানান জানেন না। তাহলে বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল করা কোনো মানেই হয় না।

রৌমারী উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার তদারকির দায়িত্বে যে বা যারা আছেন তারাও অতি অসংলগ্ন। রৌমারীর পাশের উপজেলা রাজিবপুর। এই দুই উপজেলার শিশু শিক্ষার জন্য ৭০ ভাগ দায়ী এই দুই উপজেলায় দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষা অফিসার দম্পত্তি। তারা যেনো দুই উপজেলায় স্থায়ীভাবে চাকরি করতে সরকারের কাছে দুই উপজেলা লিজ করে নিয়েছেন। সরকারি বিধান মতে একজন কর্মকর্তা এক কর্মস্থলে ৩ বছরের অধিক সময় থাকতে পারেন না। দুই উপজেলা পাশাপাশি হওয়ায় সুযোগ বুঝে নিজেরাই অদলবদল হন সহকারী শিক্ষা অফিসার এই দম্পত্তি ।

রৌমারী উপজেলার জাকির হোসেন প্রাথমিক ও গণিশিার প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে রৌমারী উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার নাজমুল করিম মন্ত্রীকে সরাসরি বাবা বলে সম্বোধন করতেন। যার কারণে আওয়ামীলীগ সরকার থাকাকালে নাজমুল করিম যাচ্ছেতাই করেছেন। নাজমুল করিমের জঘন্যতম আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছন অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার হুমকি ধামকিতে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা মুখ খোলার সাহস পান না। আরও পরিতাপের বিষয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলেও তার কোনো তদন্তের মুখ দেখতে পায় না অভিযোগকারীরা। ইতোমধ্যে দুই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের উঠেছিল কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনর শেষ সুরাহা দেখতে পায়নি রৌমারীবাসী। অনেক সুধীমহল মনে করছেন বিশেষত: সহকারী শিক্ষা অফিসারের কারণে অপরাধীরা শাস্তি পাননি। কারণ তার নিজের গলদ আরও বেশি। এঘর-ওঘর বদল করে পুরো রৌমারী-রাজিবপুরের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা শাসন করছে সহকারী শিক্ষা অফিসার এই দম্পত্তি। অনেক কিছু অদলবদল হলেও তাদের যেনো ঘুরে ফিরে রৌমারী ও রাজিবপুর দুই উপজেলাতেই মুধর হাড়ির আবাদ জমিয়েছে। যাইহোক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতরিতে একটু কঠোর হতে চেয়েছিলেন সাহেব সহকারী শিক্ষা অফিসার কিন্তু পুরোনো বিদ্যায় ঊত্তীর্ণ হতে পারেননি।
শিক্ষা জীবনের ভিত গড়ে ওঠে প্রাথমিক শিার মাধ্যমে। রৌমারীতে সেই প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বিরাজ করছে চরম বেহাল অবস্থা। যার কারণে উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান নিম্নমুখী।

গত বছরের তুলনায় এ বছর শিক্ষার্থী কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ । প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিকের পদ মিলে মোট শূন্যপদ রয়েছে ১০০টি । সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধি করা হলেও সে তুলনায় উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান অনেকটাই নিম্নমুখী এখনও। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের অদক্ষতা ও উদাসীনতা, ব্যাচে প্রাইভেট পড়ানো, টিউশনিতে ব্যস্ত থাকা, সময়মতো স্কুলে আগমন-প্রস্থান না করা, স্থানীয় প্রভাব, অনেক প্রধান শিক্ষক স্কুলের কার্যক্রমের চেয়ে শিক্ষক সমিতির কাজে বেশি ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি শিক্ষা কর্মকর্তাদেরও দায়িত্বহীনতা সবচেয়ে বেশি দায়ী বলে মনে করেন সুধীমহল। খোদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও নিজের সন্তানদের ভর্তি করেছেন কিন্ডারগার্টেনে। গোটা উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান নিম্নমুখী হওয়ায় বেশিরভাগ বিত্তশালী ও সচেতন অভিভাবকের সন্তানদের কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করানোর প্রবণতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেধাবী শিার্থী সংকট দেখা য়ায়। অনেকে যত্রতত্র মাদ্রাসা গড়ে ওঠার কারণকেও দায়ী করেন। রৌমারী উপজেলার শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৩০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিকের পদ শুন্য। এর মধ্যে নানা আইনী প্রক্রিয়া জটিলতার কারণে ১৮ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদের মামলা চলমান। ৩০টি বিদ্যালয় চলছে সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত করে প্রতিষ্ঠান প্রধানের যাবতীয় শিক্ষাকার্যক্রম। সহকারী শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে ৭০টি। এতে নিম্নমুখী হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠদান ও গুণগমান।

গত বছর উপজেলায় মোট শিার্থী ছিলো ২০ হাজার ৮৩৯ জন। চলতি বছরে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৬৯জন। এক বছরে শিক্ষার্থী কমেছে ২ হাজার ২৭০জন। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদ শুন্য থাকায় বিভিন্ন সচেতন ও অভিভাবক মহলে তুমুল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ছে । অভিভাবকরা শঙ্কা করছে তাদের সন্তানের ভিত্তিগত শিক্ষাগ্রহণ নিয়ে। অনেক প্রাথমিক স্কুল অনুমোদিত পদের চেয়ে কম সংখ্যক শিক্ষক দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। তার মধ্যে চর ইটালুকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ২জন ও পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ২জন শিক্ষক দিয়ে চলছে। চরইটালুকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৪ সালে প্রায় ১০মাস প্রধান শিক্ষক একাই স্কুল চালিয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে আর এক সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। ১১৪ জন শিক্ষার্থীর বিপরীদে শিক্ষক মাত্র ২জন। পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ সালে প্রধান শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক ছিল ৩ জন। ২০২৩ সালে ৪ জন। ২০২৪ সালে ২জন শিক্ষকের বদলি হলে এখন মাত্র ২ জন শিক্ষক আছে। তার মধ্যে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন প্রধান শিক্ষক। একজন সহকারী শিক্ষকসহ ২ জন বিদ্যালয় সামলানো মুশকিল বটে। সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে আলাপচারিতায় জানা যায়- বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি, দায়িত্বে অবহেলা, অভিভাবকদের অসচেনতা ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঠিক তদারকি না থাকার কারণে উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষারমান নিম্নমুখী।

শেষ কথায় বলা যায়- সম্প্রতি আলোচিত কেলেঙ্কারি হলো মিড ডে মিল নিয়ে। গোটা রৌমারীতে একটি শিক্ষককেও দেখা গেলো না এর প্রতিবাদ করতে। এমন কী যারা শিক্ষক সমতি নিয়ে বা শিক্ষক সমিতির পদ আকঁড়ে ধরে আছেন তাদের মুখেও কোনা আওয়াজ ওঠেনি। তার মানে শিক্ষার্থী বা শিক্ষার আর আর সমস্যায় আপনার ভিলেন হিসেবে কাজ করবেন। কিন্তু নিজের বেতনের গ্রেড বৃদ্ধির জন্য পাগলপ্রায় হয়ে শিশু শিক্ষার বারোটা বাজাচ্ছেন। যেহেতু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলমান বা চলছিল সেহেতু আপনাদের সংযত হওয়া আবশ্যক। নিজেদের লোভ সংবরণ করতে না পেয়ে পরের সন্তাদের অপূরণীয় ক্ষতি করছেন। আজ আপনার বেতনে যদি না চলে তাহলে চাকরিটা জোগাড় করার আগে চিন্তা করার দরকার ছিল বোধহয়। চাকরি পেয়ে-ই নিজেদের বড়ো বেশি বাটপার বানানোর যে খেলায় মত্ত হয়েছেন তা বড়োই অমঙ্গলজনক। স¦ার্থের জন্য শিক্ষকদের নীতি ভোঁতা হয়ে যায়। বাইজি পাড়ায় ধর্মবোধ শূন্য বলে ওয়াজ মহফিলে কোনো কাজ হয় না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নীতিতে পঁচন ধরেছে বলে তার আজ পরীক্ষা বাদ দিয়ে কর্মবিরতি দিয়ে বেতনের গ্রেড বৃদ্ধির রঙিন তামাশায় নেমেছে। গোটা দেশকে বাইজি পাড়া বানানোর বিভোর হয়েছেন।

দেশে গণতান্ত্রিক পক্রিয়ায় নির্বাচিত সরকার নাই বর্তমানে। অন্তবর্তীকালীন সরকার আছেন কেনো মতে দেশ চালানোর চাবিকাঠি নিয়ে । সেই সাথে যদি প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের গ্রেড বাড়ানো হয় তাহলে দেশের রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি পাবে নিঃসন্দেহে। ধরে নিলাম রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি পেলে সমস্যা নাই কিন্তু’ প্রশ্ন থেকে যায় রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি পেলে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে কী। বিগত ইতিহাস দেখলে বলতে হয় না শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে না। কারণ এর আগেও প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে কিন্তু শিক্ষার মান বৃদ্ধি পায়নি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের গ্রেড বৃদ্ধি হলে তারাই কেবল লাভবান হবে কিন্তু শিক্ষার্থী ও দেশের কোনো উপকার হবে না। তাহলে কী ফায়দা আছে দেশের জাতীয় রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি করার?

শেষমেষ দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এই তিন দফা দাবি নিয়ে কমপ্লিট শাটডাউনেম মাধ্যমে চলছে প্রাথকিমক শিক্ষকদের অরাজগতা নীল ছক। রাষ্ট্রযন্ত্র যদি এই অযৌক্তিক দাবির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেন তাহলে দিন দিন আরও বেকায়দায় পড়তে হবে সরকারকে। যারা এই যুক্তিবিরুদ্ধ দাবির জন্য হুঁশছাড়া হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না দিলে বেশুমার সমস্যার সৃষ্টি করেই যাবে পুরো চাকরি জীবন। দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে কয়েকগুন বেশি বেকার আছেন। যারা বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদেরর চেয়ে অনেক বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন। যেহেতু বর্তমান কর্মরত শিক্ষকরা বর্তমানে বেতন গ্রেড নিয়ে সন্তোষ না তাই তাদের রেখে কী লাভ বা বাইজি পাড়ায় ওয়াজ মহফিল করে কী হবে?

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 shobshomoy.com
Design BY Web Nest BD
shobshomoy.com