সবসময় ডেস্ক ::: গণহারে ভিসা বাতিলের পরিকল্পনা করছে কানাডা। এই পরিকল্পনার আওতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কানাডায় বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের গণহারে ভিসা বাতিল করার ক্ষমতা দেয়া হবে। এক্ষেত্রে বিশেষ করে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের চিহ্ণিত ও ভিসা বাতিল করা হতে পারে।
কানাডার সরকারের নথির বরাতে সিবিসি নিউজ জানিয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে প্রতারণামূলক ভিজিটর ভিসা আবেদন শনাক্ত ও বাতিল করতে কানাডীয় কর্তৃপক্ষ মার্কিন সংস্থাগুলোর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে।
ভারত থেকে ভিসা আবেদনকারীদের ওপর এরই মধ্যে পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসে কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য আসতে ইচ্ছুক প্রায় ৭৪ শতাংশ ভারতীয় আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ প্রতি চারটি আবেদনের মধ্যে প্রায় তিনটি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর অটোয়ার এমন কঠোর পদক্ষেপের মধ্যে সিবিসির এই প্রতিবেদনটি সামনে এলো। কানাডার অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নথির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার অভিবাসন দফতর ইমিগ্রেশন, রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডা (আইআরসিসি) ও সীমান্তরক্ষী সংস্থা কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সংস্থার সঙ্গে মিলে একটি ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করেছে।
এই ওয়ার্কিং গ্রুপের কাজ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করা যারা বাংলাদেশ ও ভারত থেকে করা প্রতারণামূলক বা সন্দেহজনক ভিসা আবেদন চিহ্নিত করবে এবং প্রয়োজনে আবেদনগুলো বাতিল করবে।
প্রতিবেদন মতে, সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, মূলত যুদ্ধ, মহামারির মতো বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং ‘নির্দিষ্ট দেশের ভিসাধারীদের’ গণহারে ভিসা বাতিল ক্ষমতা ব্যবহার করা হতে পারে। কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী লেনা দিয়াবও একই কথা বলেছেন। তবে তিনি ‘নির্দিষ্ট দেশের ভিসাধারী’দের ভিসা বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করেননি।
ক্ষমতাসীন মার্ক কার্নি সরকার এরই মধ্যে একটি বিল পার্লামেন্টে তুলেছে, যার মাধ্যমে এই ‘ওয়াকিং গ্রুপ’র মাধ্যমে গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতাকে আইনি স্বীকৃতি দেয়া হবে। সরকার দ্রুত এই বিলটি পাস করাতে চাইছে।
বিলটি আইনে পরিণত হলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা বিশেষ ভারত ও বাংলাদেশের, ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। গত আগস্টে কানাডা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের প্রায় ৭৪ শতাংশ আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে, অর্থাৎ প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনই ভিসা পাননি। ফলে ভারতের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কানাডায় উচ্চশিক্ষার পথ আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
এছাড়া নথিতে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারতের নাগরিকদের রাজনৈতিক আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) আবেদনের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালের মে মাসে যেখানে মাসে ৫০০ আবেদন জমা হতো, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সেই সংখ্যা প্রায় ২ হাজার জনে পৌঁছেছে।
এই বৃদ্ধির কারণে ভিসা যাচাই ও প্রক্রিয়াকরণে দ্বিগুণ সময় লাগছে। এই কাজে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে যেখানে গড়ে ৩০ দিন লাগত, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা বেড়ে ৫৪ দিন দাঁড়ায়। ফলে কমেছে অনুমোদনের সংখ্যা। জানুয়ারি ২০২৪-এ যেখানে ৬৩ হাজারের বেশি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল, জুনে তা নেমে আসে প্রায় ৪৮ হাজারে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
Leave a Reply