ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে আমেরিকা ও রাশিয়ার সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রুশ আগ্রাসনের জবাবে এবার দেশটির জ্বালানি খাতের দুই বৃহৎ প্রতিষ্ঠান রসনেফট ও লুকঅয়েল কোম্পানির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম এক লাফে ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। খবর বিবিসির।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এ সিদ্ধান্ত বিশ্ব তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। একই সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধানের পথ আবার অনিশ্চয়তায় ঢেকে গেছে।
মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানের জন্য বুদাপেস্টে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। কিন্তু সর্বশেষ অবস্থান পরিবর্তন করে তিনি জানিয়েছেন, বৈঠকটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
ট্রাম্প এ বিষয়ে জানান, পুতিনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি ঠিক মনে হয়নি, এতে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না। তাই আপাতত বাতিল করেছি, ভবিষ্যতে দেখব। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে জানান, রাশিয়ার যুদ্ধ তহবিলের ওপর আঘাত হানতেই এ পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, পুতিন যুদ্ধ থামাতে অস্বীকৃতি জানানোয় আমরা রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি। ক্রেমলিনের যুদ্ধে অর্থ জোগানো কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের মিত্ররাও পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি।
অন্যদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপকে ‘বিপরীত ফল বয়ে আনবে’ বলে মন্তব্য করেছে। তাদের দাবি, ইউক্রেনে রাশিয়ার লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম বৃদ্ধি ও ভারতের সতর্কতা
আমেরিকার নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ৩ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে রাশিয়া থেকে জ্বালানি কম আনার কথা ভাবছে ভারত। ভারতীয় জ্বালানি খাতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে তারা রুশ তেল আমদানি কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
২০২২ সালে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়া ছাড়মূল্যে তেল বিক্রি শুরু করলে ভারত হয়ে ওঠে তাদের সবচেয়ে বড় সমুদ্রপথের ক্রেতা। তবে এখন আমেরিকার নতুন শর্তে ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে ২১ নভেম্বরের মধ্যে রুশ তেল লেনদেন বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন পদক্ষেপ রাশিয়াকে আরো কম দামে তেল বিক্রিতে বাধ্য করতে পারে। তবে বৈশ্বিক বাজারে তেলের দাম যদি বাড়তে থাকে, সেটি আবার রাশিয়ার অর্থনীতিকে আংশিকভাবে সহায়তা দেবে।
Leave a Reply