পারভেজ আহমেদ, বিছানাকান্দি :: পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় নয় মাস আগে রাস্তার মাটি খোঁড়া হয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ওই রাস্তা এখন বেহাল। জমে থাকা পানি আর পিচ্ছিল কাদা মাড়িয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছানাকান্দি ইউনিয়নের চিত্র এটি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে কাজ শুরু হয় কিন্তু এখনও এক তৃতীয়াংশ শেষ হয় নি। দয়ার বাজার, দমদমা সীমান্ত হয়ে হাদারপাড় বাজারের দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি।
২৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকায় কাজটি পান শহরের ঠিকাদার মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রাদারস।উদ্বোধনের পরপরই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের শ্রমিকেরা রাস্তার মাটি খুঁড়ে বক্স কাটিং শেষ করেন। এরপর থেকে রাস্তাটি ওভাবেই পড়ে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় ছয় মাস আগে নির্মাণের জন্য রাস্তার মাটি খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর ঠিকাদারের লোকজনের আর কোনো খবর নেই। এখন বৃষ্টির পানি রাস্তায় জমে কাদা সৃষ্টি করেছে। এতে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা পথচারীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে ওই রাস্তা দিয়ে স্যান্ডেল হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন রুজিনা আক্তার। তিনি বলেন, রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখার কারণে পানি জমে কাদা সৃষ্টি হয়েছে। তাই জুতা হাতে নিয়েই চলতে হচ্ছে আমাদের।
এরই মধ্যে মোটরসাইকেল করে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ইকবাল নামের এক ব্যবসায়ী। কাদার মাঝে মোটরসাইকেলটি আটকে গেলে পা নামিয়ে মোটরসাইকেলটি কাদা থেকে তুলতে হয়। পরে ইকবাল বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়া মানুষ ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। দায়ে পড়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে হচ্ছে।
তুরং গ্রামের বাসিন্দা মো. ইয়াকুব আলী বলেন, ‘সড়কটি দিয়ে হাদারপার , কুপার বাজার, চোরার বাজার, সালুটিকর ও কোম্পানীগঞ্জের আশপাশের লোকজন যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তায় কাদাপানি জমে থাকায় এখন আর পথচারীরা রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারছেন না।’
দমদমা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার মিয়া বলেন, তাঁর বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে রাস্তাটি খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়। এরপর বৃষ্টিতে প্রাচীরের নিচের মাটি ধসে যায়। প্রাচীরটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এরপর তিনি বালুর বস্তা ফেলে প্রাচীরটি ধসে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। রাস্তাটির কাজ শুরু হওয়ার পর এলাকার লোকজনের কষ্ট কমবে ভেবে তিনি খুশি হয়েছিলেন। এখন রাস্তার কাজ ফেলে রাখায় তাঁদের কষ্ট বেড়েছে। দুর্ভোগের বিষয়টি ওয়ার্ডের মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।
এদিকে ঠিকাদার কোম্পানি মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রাদার্সের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, রাস্তা নির্মাণের মেয়াদ শেষ হতে আরও ১ বছর বাকি আছে । এখন প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। এ সময় রাস্তার কাজ করা যায় না। বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলেই কাজ শুরু করা হবে। তবে বৃষ্টি শুরুর আগে কেন রাস্তা খুঁড়ে রাখা হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তখন মনে হয়েছিল বর্ষার আগেই কাজ শেষ করতে পারব।’
সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসিব আহমেদ বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা শুনে আমি সেখানে গিয়ে রাস্তাটির অবস্থা দেখে এসেছি। এরপর ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে।’
Leave a Reply