সবসময় ডেস্ক :: গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দুই দেশেই ক্ষোভ বাড়ছে। শান্তির পক্ষের বিপুল মানুষ এরই মধ্যে রাস্তায় নেমেছে আগ্রাসন বন্ধ ও যুদ্ধবিরতির দাবিতে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইসরাইলের প্রতি তাদের নির্বিচারি সমর্থনের বাইরে এসে কথা বলেছেন। বাইডেন আল-শিফা হাসপাতালের সুরক্ষা নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন। অন্যদিকে সংকট উত্তরণে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের কথা বলেছেন সুনাক।
গাজার সবচেয়ে বড় আল-শিফা হাসপাতালকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আল-শিফা হাসপাতালের কাছে তেমন বড় কোনো আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হবে না। জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে কাতারের সঙ্গে আলোচনা চলছে জানিয়ে বাইডেন বলেন, এ সময় হাসপাতালগুলো সুরক্ষিত থাকবে বলেই আশা তার।
মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দশকের পর দশক ধরে যে যুদ্ধাবস্থা চলছে, একমাত্র দ্বিরাষ্ট্র সমাধানই এই অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে পারে বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সোমবার রাজধানী লন্ডনের লর্ড মেয়রস ব্যাঙ্কোয়েট হলে দেওয়া এক বক্তব্যে হামাস-ইসরাইলের সাম্প্রতিক যুদ্ধ নিয়ে নিজ দলের চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই ভাবতে পারেন যে ইসরাইলি বা ইহুদিদের প্রতি ঘৃণাবশত হামাস গত ৭ অক্টোবর হামলা চালিয়েছে কিন্তু আমার মনে হয় এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। কেবলমাত্র ঘৃণার বশবর্তী হয়ে হামাস এই হামলা করেনি। তাদের হামলার একটি বড় কারণ মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতি। গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক নেতৃস্থানীয় দেশের সঙ্গে মিত্রতা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে ইসরাইল। নিজের নিরাপত্তা ও মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার জন্য এই মিত্রতা ইসরাইলের জন্য জরুরিও ছিল। কিন্তু এই পদক্ষেপের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতিতে যে সম্প্রতি একটি বড় পরিবর্তন ঘটে গেছে, তা আমরা কেউই লক্ষ্য করিনি; আর সেই পরিবর্তনটি হলো-মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের প্রভাব বাড়ছে। ফিলিস্তিনের জন্য স্বাভাবিকভাবেই তা অস্বস্তিকর ও আতঙ্কজনক, বলেন সুনাক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, লড়াইয়ের কারণে বন্ধ হয়ে আছে আল-শিফা হাসপাতালের কার্যক্রম। বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও জ্বালানির সংকটে পড়া হাসপাতালটি ‘প্রায় একটি কবরস্থান’ হয়ে উঠেছে বলে সংস্থাটি সতর্ক করেছে। হাসপাতালটির নিচে ভূগর্ভস্থ টানেলে হামাস একটি কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ ইসরাইলের। গাজা শাসনকারী হামাস সেখানে ‘মানবিক সমাধান ও প্রতিরোধ’ করছে বলে অভিযোগ তাদের। কিন্তু হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছে।
Leave a Reply